রাতের
ঠান্ডা কলকাতাবাসীকে এখনও সে ভাবে কাঁপিয়ে দিতে পারেনি৷ দিনের
ঠান্ডার হাত ধরে কিছুটা সান্ত্বনা পুরস্কার পেল শুক্রবারের মহানগর৷
কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল৷ বেলা বাড়তেও মেঘের চাদর ফুঁড়ে রোদের দেখা
নেই৷ মাঝেমধ্যে ঠান্ডা হাওয়া৷ গোটা দিন তাই সোয়েটার -চাদর -জ্যাকেট
গায়েই ঘুরল শহর৷ বিশেষ করে শীতকাতুরেরা বেজায় বিপদে৷
পরে
দেখা যায় , আলিপুরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২১.৬ ডিগ্রির উপরে উঠতে
পারেনি৷ যা চলতি সময়ের স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ ডিগ্রি কম৷ ঘটনা হল
, গত কয়েকদিন ধরে মেঘ -কুয়াশার দাপটে এমনই ছবি উত্তরবঙ্গে৷
বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ির দিনের তাপমাত্রা ছিল ১৬.৯ ডিগ্রি৷ কোচবিহারে
১৭ .৫ ডিগ্রি , মালদহে ১৯ .০ ডিগ্রি৷ স্বাভাবিকের চেয়ে এই
তাপমাত্রা ৮ -১০ ডিগ্রি কম৷ আবহবিদরা অবশ্য এমন ঠান্ডাকে প্রকৃত
শীত বলতে নারাজ৷ আলিপুর আবহাওয়া দন্তরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র
দেবনাথের স্পষ্ট কথা , ‘রোদ না -ওঠায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা খুব একটা
বাড়তে পারেনি৷ তাই ঠান্ডার কামড় বেশি মনে হচ্ছে৷ কিন্ত্ত ঠান্ডার
এই অনুভূতি কৃত্রিম শীত৷ প্রকৃত শীতের চরিত্র একেবারেই নয়৷ তার
জন্য রাতের তাপমাত্রার উল্লেখযোগ্য পতন প্রয়োজন৷ ’ সর্বনিম্ন
তাপমাত্রার পতন শুরু হয়েছিল নভেম্বরেই৷ ১৪ .১ ডিগ্রিতে নেমে যায়
আলিপুরের পারা৷ ডিসেম্বরের শুরুতে ১২-১৩ ডিগ্রিতে পারদ নেমে গেলেই
জাঁকিয়ে বসতে পারত শীত৷ কিন্ত্ত আবহাওয়া অনুকূল না -থাকায়
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ -১৬ ডিগ্রির নীচে সে ভাবে নামতে পারেনি৷ এ
দিন অবশ্য মরসুমে প্রথম রাতের তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রির নীচে নামে৷
আলিপুরের পারা ছিল ১৩ .৮ ডিগ্রিতে৷ এ বার এখনও পর্যন্ত এটাই
সর্বনিম্ন৷ যদিও পারার এই পতনকে গুরুত্ব দিতে নারাজ আবহবিদরা৷
আলিপুর আবহাওয়া দন্তরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথের কথায় ,
‘সর্বশেষ পশ্চিমি ঝঞ্ধাটি সরে যাওয়ার পর মধ্য ভারতের উপর একটি
উচ্চচাপ বলয় তৈরি হয়েছে৷ সেটিই ঠান্ডা হাওয়া এ দিকে পাঠিয়ে
দিয়েছে৷ কিন্ত্ত উচ্চচাপ বলয়টি আর সেখানে থাকবে না৷ ফলে ঠান্ডা
হাওয়া ঢোকা বন্ধ হয়ে যাবে৷ বাড়তে শুরু করবে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা৷ ’
ঘটনা হল , কাশ্মীরের উপর নতুন একটি শক্তিশালী ঝঞ্ধা হাজির হচ্ছে৷
তার প্রভাবে রাজস্থানের উপর একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হবে৷ সেটিই মধ্য
ভারতের উচ্চচাপ বলয়টিকে ধাক্কা দিতে দিতে পূর্ব উপকূলের দিকে
সরিয়ে দেবে৷ ঘূর্ণাবর্ত-উচ্চচাপের সংঘর্ষে উত্তর ও মধ্য ভারতে
বৃষ্টিবাদলার জেরে একদিকে যেমন ঠান্ডা হাওয়ার দমক কমবে , সেই সঙ্গে
জলীয় বাষ্প ঢুকবে বাংলার অন্দরেও৷ যার ফলে আজ -কালের মধ্যে ফের
উর্ধ্বমুখী ছুট দেবে কলকাতা -সহ দক্ষিণবঙ্গের পারা৷ অর্থাত্, জাঁকিয়ে
শীত দূরেই৷ মাঝেমধ্যে নকল শীতের সান্ত্বনা জুটতে পারে বড়জোর৷কুয়াশা -মেঘে ঢেকে শহর৷ শীত পোশাকে ঢেকেই কাটল দিনটা ---শুভ্রজিত্ চন্দ্র৷ei samay
No comments:
Post a Comment