Saturday 13 December 2014

উত্তরবঙ্গের নকল শীত পাড়ি জমাল শহরেও


 রাতের ঠান্ডা কলকাতাবাসীকে এখনও সে ভাবে কাঁপিয়ে দিতে পারেনি৷ দিনের ঠান্ডার হাত ধরে কিছুটা সান্ত্বনা পুরস্কার পেল শুক্রবারের মহানগর৷ কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল৷ বেলা বাড়তেও মেঘের চাদর ফুঁড়ে রোদের দেখা নেই৷ মাঝেমধ্যে ঠান্ডা হাওয়া৷ গোটা দিন তাই সোয়েটার -চাদর -জ্যাকেট গায়েই ঘুরল শহর৷ বিশেষ করে শীতকাতুরেরা বেজায় বিপদে৷
http://i1.trekearth.com/photos/19336/img_2595-1.jpgপরে দেখা যায় , আলিপুরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২১.৬ ডিগ্রির উপরে উঠতে পারেনি৷ যা চলতি সময়ের স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ ডিগ্রি কম৷ ঘটনা হল , গত কয়েকদিন ধরে মেঘ -কুয়াশার দাপটে এমনই ছবি উত্তরবঙ্গে৷ বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ির দিনের তাপমাত্রা ছিল ১৬.৯ ডিগ্রি৷ কোচবিহারে ১৭ .৫ ডিগ্রি , মালদহে ১৯ .০ ডিগ্রি৷ স্বাভাবিকের চেয়ে এই তাপমাত্রা ৮ -১০ ডিগ্রি কম৷ আবহবিদরা অবশ্য এমন ঠান্ডাকে প্রকৃত শীত বলতে নারাজ৷ আলিপুর আবহাওয়া দন্তরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথের স্পষ্ট কথা , ‘রোদ না -ওঠায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা খুব একটা বাড়তে পারেনি৷ তাই ঠান্ডার কামড় বেশি মনে হচ্ছে৷ কিন্ত্ত ঠান্ডার এই অনুভূতি কৃত্রিম শীত৷ প্রকৃত শীতের চরিত্র একেবারেই নয়৷ তার জন্য রাতের তাপমাত্রার উল্লেখযোগ্য পতন প্রয়োজন৷ ’ সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পতন শুরু হয়েছিল নভেম্বরেই৷ ১৪ .১ ডিগ্রিতে নেমে যায় আলিপুরের পারা৷ ডিসেম্বরের শুরুতে ১২-১৩ ডিগ্রিতে পারদ নেমে গেলেই জাঁকিয়ে বসতে পারত শীত৷ কিন্ত্ত আবহাওয়া অনুকূল না -থাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ -১৬ ডিগ্রির নীচে সে ভাবে নামতে পারেনি৷ এ দিন অবশ্য মরসুমে প্রথম রাতের তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রির নীচে নামে৷ আলিপুরের পারা ছিল ১৩ .৮ ডিগ্রিতে৷ এ বার এখনও পর্যন্ত এটাই সর্বনিম্ন৷ যদিও পারার এই পতনকে গুরুত্ব দিতে নারাজ আবহবিদরা৷ আলিপুর আবহাওয়া দন্তরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথের কথায় , ‘সর্বশেষ পশ্চিমি ঝঞ্ধাটি সরে যাওয়ার পর মধ্য ভারতের উপর একটি উচ্চচাপ বলয় তৈরি হয়েছে৷ সেটিই ঠান্ডা হাওয়া এ দিকে পাঠিয়ে দিয়েছে৷ কিন্ত্ত উচ্চচাপ বলয়টি আর সেখানে থাকবে না৷ ফলে ঠান্ডা হাওয়া ঢোকা বন্ধ হয়ে যাবে৷ বাড়তে শুরু করবে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা৷ ’ ঘটনা হল , কাশ্মীরের উপর নতুন একটি শক্তিশালী ঝঞ্ধা হাজির হচ্ছে৷ তার প্রভাবে রাজস্থানের উপর একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হবে৷ সেটিই মধ্য ভারতের উচ্চচাপ বলয়টিকে ধাক্কা দিতে দিতে পূর্ব উপকূলের দিকে সরিয়ে দেবে৷ ঘূর্ণাবর্ত-উচ্চচাপের সংঘর্ষে উত্তর ও মধ্য ভারতে বৃষ্টিবাদলার জেরে একদিকে যেমন ঠান্ডা হাওয়ার দমক কমবে , সেই সঙ্গে জলীয় বাষ্প ঢুকবে বাংলার অন্দরেও৷ যার ফলে আজ -কালের মধ্যে ফের উর্ধ্বমুখী ছুট দেবে কলকাতা -সহ দক্ষিণবঙ্গের পারা৷ অর্থাত্, জাঁকিয়ে শীত দূরেই৷ মাঝেমধ্যে নকল শীতের সান্ত্বনা জুটতে পারে বড়জোর৷
কুয়াশা -মেঘে ঢেকে শহর৷ শীত পোশাকে ঢেকেই কাটল দিনটা ---শুভ্রজিত্ চন্দ্র৷ei samay

No comments:

Post a Comment