গুপ্ত পরবর্তী যুগে এই বাংলায় হরিকেল রাজ্যের কথা হয়তো শুনেছেন , কিন্ত্ত তাঁদের ব্যবহূত মুদ্রা কেমন দেখতে ছিল জানেন ? আজ থেকে কলকাতার বালিগঞ্জে যে মুদ্রা উত্সব শুরু হচ্ছে , সেখানে দেখা মিলবে এই মুদ্রার৷ হরিকেল থেকে শুরু করে আধুনিক যুগের বাংলার মুদ্রা থাকছে প্রদর্শনীতে৷ আয়োজক নিউমিসম্যাটিক সোসাইটি অফ ক্যালকাটা৷ এ বারের উত্সবের আহ্বায়ক কুণাল চট্টোপাধ্যায় বলেন , ‘হরিকেল মুদ্রা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে বাংলায় ব্যবহূত মুদ্রা থাকবে এই প্রদর্শনীতে৷ আলাদা ভাবে থাকছে বিদেশি মুদ্রা ও স্বাধীন ভারতের মুদ্রাও৷ ’প্রদর্শনীর পাশাপাশি থাকছে মেলার আয়োজনও৷ মেডাল , ব্যাঙ্ক নোট , ও টোকেন নিয়ে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ীরা আসবেন সংগ্রাহকদের জন্য পসরা নিয়ে৷ দেশি -বিদেশি সাধারণ ও স্মারক মুদ্রা , প্রুফ ও আনসার্কুলেটেড কয়েন , কালার্ড কয়েন তো সংগ্রহ করতেই পারবেন উত্সাহীরা৷ নোয়াখালি , কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম -সহ বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে প্রাচীন হরিকেল রাজ্য ছিল সন্তম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে অষ্টম শতক পর্যন্ত৷ চৈনিক বৌদ্ধ পর্যটক আইসিনের বিবরণে এই রাজ্যের কথা রয়েছে৷ তারও আগে এই বাংলায় ছিল চন্দ্রকেতুগড় , এখনও তার ধ্বংসাবশেষ দেখা যায় উত্তর ২৪ পরগনার বেড়াচাঁপায়৷ সেখান থেকেও শুঙ্গ-সহ বিভিন্ন যুগের মুদ্রা পাওয়া গিয়েছে৷ মুঘল যুগের মুদ্রাও থাকছে , যা ফারসি হরফে লেখা৷ সুলতানি যুগের মুদ্রা প্রদর্শিত হবে পৃথক ক্যাবিনেটে৷ তখন অবশ্য আরবি হরফ থাকত মুদ্রায়৷ ত্রয়োদশ থেকে সন্তদশ শতকের মুদ্রাগুলি এই দুই রাজত্বের৷ তবে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হয়তো গুন্তযুগের মুদ্রা৷ কোম্পানির আমলে ব্রিটিশ যুগে কলকাতার টাঁকশালে তৈরি মুদ্রাও থাকছে প্রদর্শনীতে৷ এ ছাড়া সারা বিশ্বের মুদ্রার জন্যও আলাদা ক্যাবিনেট থাকছে৷ এক কথায় দেড় হাজার বছরের বঙ্গ জনপদের মুদ্রার ইতিহাস এক ছাদের তলায় , মাত্র ন ’টি ক্যাবিনেটে৷
শুক্রবার সকালে এই উত্সবের সূচনা করবেন অবসরপ্রান্ত সেনাপ্রধান শঙ্কর রায়চৌধুরী৷ থাকবেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক স্বামী বিশ্বাত্মানন্দ , বিচারপতি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় ও প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুন্ত৷ মেলা চলবে রবিবার পর্যন্ত, সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ছ ’টা পর্যন্ত৷
২৭ ডিসেম্বর নিলামও হবে৷
No comments:
Post a Comment