Thursday 11 December 2014

জীববৈচিত্র্যের সুলুকসন্ধান অ্যাপেই

 Ei Samay



শহরে কি চড়াই একেবারে কমে গিয়েছে ? পৌষ -মাঘের পালা শেষ হয়েও কি আমের মুকুল ধরছে না ? প্রজাপতি কি আর দেখতে পান তেমন ? প্রশ্ন এমন শয়ে শয়ে জমতে পারে আপনার মনে৷ কিন্ত্ত সেই প্রশ্নের জবাব থাকবে না৷ কিন্ত্ত কেউ যদি আপনার হাতে এই সব তথ্যই তুলে দেয় ? যদি এমন হয় যে মোবাইলের একটা অ্যাপেই আপনি তুলে রাখতে পারবেন আপনার আশপাশের পরিবেশের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ ! এই প্রজেক্ট নিয়েই আমেরিকা জয় করে ফিরেছেন দেশের বিভিন্ন শহরের পরিবেশপ্রেমীরা৷ যাঁরা বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত৷ কলকাতা শহরেও এই পরিবেশ পর্যবেক্ষণের মোবাইল অ্যাপ পরিষেবা পাওয়া যাবে৷ সেই পরিষেবায় জোর দেওয়া হচ্ছে শহরের চার প্রান্তের মোট ১১টি স্কুলের ছাত্রছাত্রীর উপরেই৷ দেশের চারটি শহর (কলকাতা , দিল্লি , মুম্বই, হায়দরাবাদ )-এ এমন স্কুল পড়ুয়াদের দেওয়া তথ্য দিয়েই জীববৈচিত্র্যের যাবতীয় পর্যবেক্ষণ রাষ্ট্রপুঞ্জের হাতে তুলে দেবে ওই অ্যাপ -পরিচালনার নেপথ্যে থাকা ব্যক্তিরা৷ তবে ইচ্ছে হলে আগ্রহী প্রকৃতি প্রেমিকরাও নিজেদের অ্যানড্রয়েডে অনায়াসে সেই অ্যাপ ইনস্টল করে রাখতে পারবেন৷ বুধবার বিড়লা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি মিউজিয়ামের ডেমনস্ট্রেশন হলে সেই অ্যাপেরই উদ্বোধন হয়ে গেল৷ যে প্রজেক্টটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের ব্যুরো অফ এডুকেশন অ্যান্ড কালচারাল অ্যাফেয়ার -এর প্রতিযোগিতা জিতে এসেছে , তার আনুষ্ঠানিক নাম মোবাইল অ্যাপস ফর ক্লাইমেট স্টাডি৷ তবে www.inaturewatch.org ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অথবা প্লে-স্টোরে ওই অ্যাপ খুঁজে বের করতে হবে৷ তিনটি আলাদা আলাদা অ্যাপ রয়েছে সেখানে , যথাক্রমে আইবার্ডস , আইবাটারফ্লাই , আইট্রিজ৷ নাম দেখেই বোঝা যাচ্ছে চারটি শহরের পাখি , প্রজাপতি ও গাছের জীববৈচিত্র্য পর্যবেক্ষণগুলি সংগ্রহ করাই ওই প্রজেক্টের প্রাথমিক উদ্দেশ্য৷ এই অ্যাপ ডেভেলপমেন্টের পিছনে রয়েছেন , মুম্বইয়ের বাসিন্দা এবং লেডি বার্ড এনভায়রনমেন্টাল কনসাল্টিং সংস্থার ডিরেক্টর ভি শুভলক্ষ্মী , আইআইইএসটি , শিবপুর (বেসু)-এর সিভিল ইঞ্জানিয়ারংয়ের অধ্যাপক অনির্বাণ গুন্ত-সহ আহমেদাবাদ , দিল্লির মোট ছ’জনের একটি দল৷ কলকাতা , হায়দরাবাদ এবং দিল্লিতে এই অ্যাপের কাজ রূপায়ণ করছে ওর্য়াল্ড ওয়াইল্ড ফান্ড ফর নেচার (ডব্লিউডব্লিউএফ )৷ বিভিন্ন স্কুলে ডব্লিউডব্লিউএফ -এর যে সব পরিবেশ পর্যবেক্ষণের প্রজেক্ট চলে সেখানকার ছাত্রছাত্রীদের নিয়েই এই পর্যবেক্ষণের কাজ মূলত করা হবে৷ এরজন্য ষষ্ঠ , সন্তম , অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদেরই বাছা হয়েছে৷ তারাই শহরের জীববৈচিত্র্যের বিষয়ে তথ্য তুলে দেবে ওই অ্যাপে৷ কী ভাবে কাজ করবে তারা ? শুভলক্ষ্মীর কথায় , ‘স্কুলগুলির ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের আশে পাশে পরিবেশ পর্যবেক্ষণের কাজ করতে গিয়ে যা যা দেখবে সেটাই নিজেদের কাছে রাখবে৷ কোনও এক শিক্ষক সেই তথ্য নিজের মোবাইল থেকে অ্যাপে তুলে দেবেন৷ চাইলে পড়ুয়ারা নিজেদের বা অভিভাবকদের মোবাইলও ব্যবহার করতে পারে৷ ’ শহরে যে স্কুল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সবথেকে বেশি তথ্য তুলে দেবে তাদের জন্য থাকছে পুরস্কার৷ ডব্লিউডব্লিউএফ -এর স্টেট ডিরেক্টর শাশ্বতী সেন , রাজ্য বায়োডাইভারসিটি বোর্ডের চেয়ারম্যান অশোক সান্যাল এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন৷
কী উদ্দেশ্যে এই অ্যাপ ? অনির্বাণবাবু বলছিলেন , ‘পৃথিবী জুড়েই সবুজ ধ্বংস -সহ একাধিক কারণে জীববৈচিত্র্য দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে৷ পরিবেশে এমন পরিবর্তন কীভাবে ঘটছে তা জানার জন্যই এই প্রজেক্ট করছি৷ আগামী বছরের প্রথম তিনমাস ই তথ্য সংগ্রহ অভিযান চালাব৷ ’মোবাইল অ্যাপস ফর ক্লাইমেট স্টাডি➠ কলকাতায় পাওয়া যাবে পরিবেশ পর্যবেক্ষণের মোবাইল অ্যাপ পরিষেবা ➠ দেশের চারটি শহর (কলকাতা , দিল্লি , মুম্বই, হায়দরাবাদ )-এ স্কুল পড়ুয়াদের দেওয়া তথ্য দিয়েই জীববৈচিত্র্যের যাবতীয় পর্যবেক্ষণ রাষ্ট্রপুঞ্জের হাতে তুলে দেওয়া হবে ➠ www.inaturewatch.org ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অথবা অ্যানড্রয়েড প্লে-স্টোরে ওই অ্যাপ খুঁজে বের করতে হবে গ্রাহককে➠ বিভিন্ন স্কুলে যে সব পরিবেশ পর্যবেক্ষণের প্রজেক্ট চলে সেখানকার ছাত্রছাত্রীদের নিয়েই এই পর্যবেক্ষণের কাজ করা হবে ➠ ষষ্ঠ , সন্তম , অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারাই শহরের জীববৈচিত্র্যের বিষয়ে তথ্য তুলে দেবে ওই অ্যাপে➠ ছাত্রছাত্রীরা পরিবেশ পর্যবেক্ষণের কাজ করতে গিয়ে যা যা দেখবে সেটাই নিজেদের কাছে রাখবে৷ শিক্ষকরা সেই তথ্য নিজের মোবাইল থেকে অ্যাপে তুলে দেবেন৷

No comments:

Post a Comment