নয়াদিল্লি: সংস্কারের পথে বড় ধাপ। দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে বহুচর্চিত অভিন্ন পণ্য পরিষেবা কর (জিএসটি) পেশ হল লোকসভায়। শুক্রবার নিম্নকক্ষে বিলটি পেশ করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি. এই বিলের মাধ্যমে একটি জাতীয় বিক্রয় কর চালু করার পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্র। তাদের আশা, একবার এই কর চালু হলে দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উত্পাদনের হার ১-২ শতাংশ বাড়বে। ফলে, দেশের সংস্কারের জট অনেকটাই কাটবে।
এদিন জেটলি জানান, সম্প্রতি বিভিন্ন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের নিয়ে গঠিত অর্থ-সংক্রান্ত উচ্চ-পর্যায়ের কমিটির বৈঠকে এই বিল নিয়ে প্রায় ঐকমত্যে পৌঁছনো সম্ভব হয়েছে। তিনি আশ্বাস দেন, এখানে কোনও পক্ষপাতিত্ব হবে না। প্রতিটি রাজ্যের স্বার্থ যাতে রক্ষা হয়, কেন্দ্র তা ওপর নজর রাখছে। তিনি বলেন, কোনও রাজ্যই এক টাকা রাজস্ব হারাবে না। বস্তুত, ২০১১ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের নেতৃত্বাধীন তত্কালীন ইউপিএ সরকার লোকসভায় সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ করেছিল। সেই সময়ে বিলের অন্তর্ভুক্তির পরিবর্তে রাজ্যগুলি পাঁচ-বছরের ক্ষতিপূরণ দাবি করায় সে যাত্রায় আর বিলটি পাশ করানো সম্ভব হয়নি।
এদিন জেটলি জানান, কেন্দ্রীয় বিক্রয় করের (সিএসটি) কমে যাওয়ার ফলে রাজ্যগুলির যে আংশিক ক্ষতি হবে, তার জন্য তারা প্রাথমিকভাবে ১১ হাজার কোটি টাকা পাবে। ২০০৫ সালে রাজ্য-পর্যায়ের ভ্যাট চালু হওয়ার পর দুধাপে সিএসটি ৪ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়ায় ২ শতাংশে।
তবে, লোকসভায় বিল পাশ হলেও রাজ্যসভায় বিল পাশ করতে কাঠখড় পোড়াতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, লোকসভায় বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও, রাজ্যসভায় তারা সংখ্যালঘু।
এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের দাবি-দাওয়া না-মেনে কেন্দ্রীয় সরকার পণ্য-পরিষেবা কর (জিএসটি) চালু করতে চাইলেও মমতা তা মানতে নারাজ। জিএসটি বিলকে রুখতে বৃহস্পতিবারই দলের সাংসদদের তৃণমূল নেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, লোকসভা ও রাজ্যসভায় এর বিরুদ্ধে সরব হতে। মমতার বক্তব্য, ‘যে-ভাবে পশ্চিমবঙ্গকে অগ্রাহ্য করে পণ্য-পরিষেবা কর চালুর চেষ্টা হচ্ছে, তা ডেথ অব ফেডারেল ডেমোক্র্যাসি।’ তৃণমূল নেতৃত্বের যুক্তি, রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের একটি কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জিএসটি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু সেই কমিটিতে পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে রাখা হয়নি। অথচ পশ্চিমবঙ্গের তরফে যে সব দাবি ছিল, সেগুলোও মানা হয়নি।
তবে সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন জেটলি। অর্থ মন্ত্রক সূত্রে অবশ্য দাবি করা হচ্ছে, রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের এমপাওর্য়াড কমিটি থেকে কাউকেই বাদ দেওয়া হয়নি। সেখানে সব রাজ্যকে রাখা হয়েছিল। যদিও সেই কমিটি জিএসটি নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে সক্ষম না হওয়ায়, পরে ছোট ছোট কমিটি করে সমাধানসূত্র বের করা হয়। উল্লেখ্য, বুধবার জিএসটি চালুর জন্য সংবিধান সংশোধনী বিলে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। abp ananda
No comments:
Post a Comment