http://www.slashdiabetes.com/wp-content/uploads/Winter-Snowman-1.jpgআচমকা কোথা থেকে হাজির একরাশ মেঘ। তা সারাদিন সূর্যের মুখ আড়াল করেই রইল। শীতের মেজাজটা হঠাৎ করে যেন ধাক্কা খেল একটু। পিকনিকে, চিড়িয়াখানায় কিংবা ইকো পার্কে পিঠে রোদ্দুর নিয়ে বসে থাকার মজাটাই যে নেই! পৌষের প্রথম রবিবার দিনের বেলাটা শীত-শীত করলেও, রাতে বেড়ে গেল তাপমাত্রা।
সার্কাস, প্রদর্শনী, মেলা, পার্ক স্ট্রিটের আলোকসজ্জা, বড়দিনের উৎসব সব সাজিয়ে যখন আরও কড়া ঠান্ডার অপেক্ষায় মহানগর, তখন হঠাৎ কেন এই ছন্দপতন?
এ দিন সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা (১৩. ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) দেখে বোঝার উপায় ছিল না বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কী দাঁড়াবে। কিন্তু ঘড়ির কাঁটা আটটা পেরোলেও যখন সূর্যের মুখ দেখা গেল না, তখনই প্রমাদ গুনলেন শহরবাসী। এক আবহবিদের কথায়, “আকাশে মেঘ থাকায় উত্তুরে হাওয়া ছিল না। তাই সারাদিন শীত-শীত ভাবটা থাকলেও, ঠান্ডার কামড় তেমন ছিল না। বেলা বাড়তেও সূর্য সে ভাবে উত্তাপ দিতে না পারায় কিছুটা ঝিমিয়েই ছিল রবিবারের কলকাতা।”
শীতের মাঝখানে মেঘ এল কোথা থেকে? হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, বাংলাদেশে বায়ুমণ্ডলের নীচের স্তরে একটি ঘূর্ণাবর্ত এবং দক্ষিণবঙ্গে বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরে একটি নিম্নচাপ রেখার জন্যই দক্ষিণবঙ্গে ঢুকেছে মেঘ। সেই মেঘই শীতের স্বাভাবিক ছন্দ নষ্ট করে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩.২ ডিগ্রিতে নেমে যাওয়া এবং তীব্র উত্তুরে হাওয়া পরিমণ্ডলে ঢুকে পড়ার পরে শীত নিয়ে যে আশা জেগেছিল, ঘূর্ণাবর্ত এবং নিম্নচাপ অক্ষরেখার জন্য আপাতত দু’একদিন তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না।
যে ভাবে প্রথম দফাতেই ব্যাট চালিয়ে খেলতে শুরু করেছিল শীত, তাতে আশা জেগেছিল কলকাতাবাসীর। কিন্তু জোড়া প্রতিকূলতায় বর্ষশেষে কী হবে, তা নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় উৎসবপ্রেমী বাঙালি।
তবে হাওয়া অফিস কিন্তু আশা জোগাচ্ছে। কাশ্মীরের উপর দিয়ে একের পর এক পশ্চিমী ঝঞ্ঝা যে ভাবে উত্তর ভারতের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, তাতে কড়া ঠান্ডায় কলকাতায় বর্ষশেষের জমজমাট উৎসবের পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছেন আবহবিদেরা। উত্তর ভারত থেকে তীব্র উত্তুরে হাওয়া মধ্য ভারত হয়ে নেমে আসছে। মধ্যপ্রদেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ চলছে। রাজস্থান, পঞ্জাব, হরিয়ানা সর্বত্র কনকনে ঠান্ডা। বাংলাদেশে যে ঘূর্ণাবর্তটি তৈরি হয়েছে, সেটি সাময়িক। বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরে যে নিম্নচাপ রেখাটি রয়েছে, সেটির স্থায়িত্বও বেশি দিনের বলে মনে করছেন না তাঁরা।
এক আবহবিদ জানাচ্ছেন, উত্তুরে হাওয়া কোথাও যদি বাধা না পেয়ে সরাসরি দক্ষিণবঙ্গে ঢুকে পড়তে পারে, তা হলে ঘূর্ণাবর্ত, নিম্নচাপ খড়কুটোর মতো উড়ে যাবে।