Monday 15 December 2014

তিন হাজার বছর পর ফিরছেন ফারাও

এশিয়ার ফোরাত নদীর পাড় থেকে আফ্রিকার সুদানে নীল নদের পাড় পর্যন্ত বিস্তৃত সাম্রাজ্যের অধীশ্বর ছিলেন ফারাও তৃতীয় আমেনহোটেপ। এই সম্রাটের রাজত্বকালকেই প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উত্থানের সোনালি সময় বলে মনে করা হয়। লুক্সোরের সমাধিক্ষেত্রে ছিল তাঁর ৪৩ ফুট উচ্চতার অনন্য এক দণ্ডায়মান মূর্তি। ভূমিকম্পে গুঁড়িয়ে যাওয়ার তিন হাজার ২০০ বছর পর তৃতীয় আমেনহোটেপের মূর্তিটিকে রোববার আবারও মাথা উঁচু করে দাঁড় করিয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন

নীল নদের পশ্চিম পাড়ে মন্দির নগর লুক্সোর। মেমোন কলোসি নামে পরিচিত আমেনহোটেপের যুগল মূর্তির জন্য এই সমাধিমন্দির জগদ্বিখ্যাত। কিন্তু ওই যুগল মূর্তিতে তৃতীয় আমেনহোটেপকে দেখা যায় বসে থাকা অবস্থায়। ফলে কয়েক হাজার বছর ধরেই সম্রাটের দণ্ডায়মান মূর্তিটির অভাব ছিল যেন এই সমাধিক্ষেত্রে। এখন সমাধিক্ষেত্রের উত্তর ফটকে তৃতীয় আমেনহোটেপের মূর্তিটি পুনরায় স্থাপন করায় সে অভাব পূরণ হলো।

সমাধিক্ষেত্রটির পুননির্মাণের কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জার্মান-আর্মেনিয়ান প্রত্নতত্ত্ববিদ হোরিগ সোরোজিয়ান। তিনি জানান, তৃতীয় আমেনহোটেপের এই ৪৩ ফুট উচ্চতার মূর্তিটিই এখন মিসরে কোনো সম্রাটের সবচেয়ে উঁচু দণ্ডায়মান মূর্তি। তিন হাজার বছরেরও বেশি আগে ভূমিকম্পে বিশালাকার এ মূর্তিটি ভেঙে ৮৯টি বড় খণ্ড এবং বহু ছোট ছোট টুকরোতে গুঁড়িয়ে গিয়েছিল। টুকরোগুলোকে পুনরায় সংযুক্ত করার পর মূর্তিটির ওজন দাঁড়িয়েছে ১১০ মেট্রিক টন। এত বিশালাকার কোনো প্রাচীন মূর্তির এমন পুননির্মাণ এটাই প্রথম বলেও জানিয়েছে প্রত্নতা​িত্ত্বক দলটি।

সাদা রঙের মুকুট পরা মিসরীয় সম্রাটের এই মূর্তিতে দুই হাতে নিজের নাম লেখা প্যাপিরাস ধরে আছেন তৃতীয় আমেনহোটেপ। তাঁর কোমরবন্ধনীতে আছে বাজপাখির মাথাওয়ালা হাতলের একটা ড্যাগার, সেখানেও নিজের নাম লেখা। মাত্র ১২ বছর বয়সে সিংহাসনে আসীন হওয়া তৃতীয় আমেনহোটেপ ১৩৫৪ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দে মারা যান।

No comments:

Post a Comment