Saturday, 13 December 2014

দাম নিয়ে বিকোচ্ছে বিনামূল্যের ফর্ম, অভিযোগ নানা হয়রানির

https://zll.in/wp-content/uploads/2014/11/Aadhar-link-to-LPG-Cylinder-ZLL.in_-300x200.jpg 
দেওয়ার কথা বিনামূল্যে। অথচ আনতে গেলে দাম চাইছেন অনেক গ্যাস ডিলার। রান্নার গ্যাসের ভর্তুকির টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাওয়ার জন্য আবেদন পত্র (ফর্ম) আনতে গিয়ে বিভিন্ন গ্যাসের দোকানে এমন হয়রানির শিকার হচ্ছেন অনেক গ্রাহকই। কোথাও আবার অভিযোগ উঠছে ফর্ম দেরিতে পাওয়ার। শেষ পর্যন্ত কটি ফর্ম জমা দিতে হবে, অনেককে ধন্দে পড়তে হচ্ছে তা নিয়েও। সব মিলিয়ে, এ রাজ্যে গ্যাসে ভর্তুকির টাকা অ্যাকাউন্টে আসার প্রস্তুতি পর্বে নানা অনিয়ম ও বিভ্রান্তির শিকার হতে হচ্ছে গ্রাহকদের।
পশ্চিমবঙ্গে গ্যাসের ভর্তুকি সরাসরি অ্যাকাউন্টে পাঠানোর ব্যবস্থা চালু হওয়ার কথা আগামী ১ জানুয়ারি থেকে। তবে এ বার এই প্রক্রিয়াকে শুধু আধার নম্বরের সঙ্গে বেঁধে না রেখে মোদী-সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, শুধু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকলেও তার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট গ্রাহক সেখানে ভর্তুকির টাকা পাবেন। তবে যাঁরা আগের বার আধার নম্বরের ভিত্তিতে এই প্রকল্পে নাম তুলেছেন ও ভর্তুকির টাকা পেয়েছেন, তাঁদের আর নতুন করে ফর্ম জমা দিতে হবে না।
যাঁরা আধার নম্বর হাতে পেয়েছেন কিন্তু আগে তা জমা দেননি, তাঁরা এখন তা করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আগের মতোই দু’টি আবেদন পত্র (ফর্ম-১ ও ফর্ম-২) ভর্তি করে আলাদা-আলাদা ভাবে গ্যাসের ডিলার এবং অ্যাকউন্ট থাকা ব্যাঙ্কের কাছে জমা দিতে হবে। আর শুধু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ভিত্তিতে ভর্তুকি পেতে হয় ফর্ম-৩ পূরণ করে ব্যাঙ্কের কাছে জমা দিতে হবে, নইলে ডিলারের কাছে দিতে হবে ফর্ম-৪।
তেল সংস্থাগুলি স্পষ্ট জানাচ্ছে, এই সমস্ত ফর্ম ডিলারদের কাছে বিনামূল্যে পাওয়ার কথা। এমনকী গ্রাহকের দরজায় দ্রুত পৌঁছতে এ জন্য তারা কাজে লাগাতে পারে সিলিন্ডারের ‘ডেলিভারি-বয়’দেরও। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই ফর্ম পেতে টাকা লাগার কথা নয়। কিন্তু অনেক গ্রাহকেরই অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের ফর্ম কিনতে হচ্ছে। দিতে গেলে আধার কার্ডের ফোটোকপি নিতে চাইছেন না ডেলিভারি বয়ও। ডিলারদের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, তেল সংস্থাগুলির কাছ থেকে ফর্ম পেতে দেরি হচ্ছে। ফলে ওয়েবসাইট থেকে বা পুরনো ফর্ম থেকে তা তৈরি করে দিতে যে খরচ হচ্ছে, সেটাই নিচ্ছেন কেউ কেউ। মুনাফা করা হচ্ছে না। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যেখানে বিনামূল্যে ফর্ম বিলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেখানে গ্রাহককে গাঁটের কড়ি খরচা করতে হবে কেন?
বিভ্রান্তি রয়েছে আরও কিছু ক্ষেত্রে। তেল সংস্থাগুলি আগেই জানিয়েছে, শুধু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ভিত্তিতে ভর্তুকি পেতে হয় ফর্ম-৩ পূরণ করে ব্যাঙ্কে দিতে হবে, নইলে ডিলারকে দিতে হবে ফর্ম-৪। কিন্তু অনেক গ্রাহকের অভিযোগ, তাঁদের দুটি ফর্মই জমা দিতে বলছে গ্যাসের দোকান। অথচ প্রযুক্তিগত সমস্যায় ব্যাঙ্ক বহু ক্ষেত্রে ফর্ম-৪ জমা নিতে চাইছে না। অনেকের আবার অভিযোগ, ফর্ম জমার সময় বা দোকানে গিয়ে গ্যাস বুক করতে গেলে ‘কেওয়াইসি’ ফর্ম জমা দিতে বলা হচ্ছে। অথচ আগে জমা দেওয়া সত্ত্বেও ফের কেন তা দিতে হবে, সেটি বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁরা।
সরাসরি ভর্তুকি পেতে তেল সংস্থাগুলির সাইটেও নাম নথিভুক্তির সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে যাঁরা আধার নম্বর দিয়ে তা করবেন, তাঁদের আর গ্যাসের দোকানে বা ব্যাঙ্কে যেতে হবে না। কিন্তু আধার নম্বর না-থাকলে, ওয়েবসাইটে নাম তোলা সত্ত্বেও পরে নিজেদের ই-মেলে সেই তথ্য সম্বলিত ফর্ম পাবেন। তার ‘প্রিন্ট-আউট’ ফের জমা দিতে হবে গ্যাসের দোকানে। তেল সংস্থাগুলির বক্তব্য, আগেই আধার নম্বর তাদের হাতে থাকলে, সরাসরি গ্রাহকের তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু তা না হলে অন্য কোনও গ্রাহকের অ্যাকাউন্টের তথ্য দিয়ে নিজে সেই ভর্তুকির টাকা হাতাতে পারেন অন্য কেউ। আর সেই কারণেই সামনাসামনি যাচাই করার এই ব্যবস্থা।
 anandabazar

No comments:

Post a Comment